Saturday, April 19, 2025

চট্টগ্রাম ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের মঞ্চ ভাঙচুর

বিবাংলা ডেস্ক
০ মন্তব্য ১০৫ views

চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা মঞ্চ, প্যান্ডেল, চেয়ার, ব্যানারসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক এসব সরঞ্জাম ভেঙে তছনছ করেন বলে জানান আয়োজকরা।

এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকালের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিসি হিলে নববর্ষ উদযাপন পরিষদের অন্যতম সংগঠক প্রণব চৌধুরী সমকালকে বলেন, পহেলা বৈশাখের বর্ণাঢ্য আয়োজনকে ঘিরে এখানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে পুরো ডিসি হিলে প্যান্ডেল তৈরিসহ নানা সাজসজ্জা করা হয়েছিল। তবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন যুবক প্রবেশ করে মঞ্চ থেকে শুরু করে সবকিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। বৈশাখের আগের দিন এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি বড় ধাক্কা। এমন ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর প্রতিবাদে ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

বর্ষবরণের প্রস্তুতির মধ্যেই আজ রোববার ডিসি হিলে ‘সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ’ পহেলা বৈশাখের নানা আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।

পরিষদের সমন্বয়কারী সুচরিত দাশ খোকন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে ৪০-৫০ যুবক এসে ডিসি হিলে আমাদের অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় প্যান্ডেলসহ মঞ্চের সামনে থাকা বেশকিছু চেয়ার। সোমবার সকাল থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এখন দুর্বৃত্তদের হামলায় সবকিছুই তছনছ হয়ে গেছে। তাই এখানে আর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আবদুল করিম বলেন, ‘মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে আমাদের একটি টিম আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ডিসি হিলে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে বর্ষবরণের মঞ্চ ভাঙচুর ও হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

আজ রাতে সংবাদমাধ্যম পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহমদ জসীম বলেন, ‘এই হামলা দেশের অস্তিত্ব ও ঐতিহ্যের জন্য অশনিসংকেত। ঘৃণিত স্বৈরাচার ও মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেই এ জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ডিসি হিলে এ হামলা কেবল অনুষ্ঠান বানচাল নয়, এটা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি, লোকজ সমৃদ্ধ শিল্প এবং অতীতের লড়াইয়ের সকল অর্জনকে ধূলিসাৎ করারই অপচেষ্টা। মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে এই অপচেষ্টাগুলোকে আরও উসকে দেওয়া হয়েছে। সরকার মব সংস্কৃতি এবং মাজার ভাঙচুর, বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ম্যূরাল ও মোটিফে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার মতোই ডিসি হিলে এ হামলা মোকাবিলায় ব্যর্থ ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এই হামলা ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলের প্রতিবাদ করতে হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।

আরো পড়ুন

একটি মন্তব্য লিখুন

আমাদের সম্পর্কে

বাঙালীর সংবাদ বাংলা ভাষায়, সবার আগে সেরা সংবাদ পেতে বি-বাংলা ভিজিট করুন।

আজকের সর্বাধিক পঠিত

নিউজলেটার