শেষ হয়েছে চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলন। বিদেশি বিনিয়োগকারীর সামনে বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে তুলে ধরতে এবারের আয়োজন ছিল অন্য বছরের চেয়ে ব্যতিক্রম। আয়োজকরা বলেছিল বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা থেকে বিনিয়োগকারীকে নতুন ধারণা দিতে চেষ্টা থাকবে লক্ষণীয়।
প্রথা ভেঙে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিতে সফররত বিনিয়োগকারী বা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে সরেজমিন দেশের তিন প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে নিয়ে যায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। কিন্তু যে অবকাঠামো উন্নয়ন পরিদর্শন করানো হয়েছে সেগুলো শেখ হাসিনার সময়ে করা।
আওয়াজ তুলেছিল দেশে আসবে ২৩০০ বিনিয়োগকারী। তাদের মধ্যে থাকবে ইলন মাস্ক এর মতো বিজনেস ম্যাগনেটরা। কিন্তু আসেনি উল্লেখ করার মতো কেউই।
বিডা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সম্মেলনে ৪২ দেশ থেকে চার শতাধিক অংশগ্রহণকারী সরাসরি অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নাকি তিন শতাধিক ছিলেন বিদেশি। তালিকায় থাকা ১৫টির বেশি নাম একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরাই বেশি এ বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
অংশগ্রহণকারীর তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এমন কিছু প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যোগদান করেছিলেন যাদের নেই কোম্পানীর কোন
এর বাইরে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকেও প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ সম্মেলন পর্যবেক্ষণে আসেন। কয়েকটি দেশের ব্যবসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আটজন এ সম্মেলনে যোগ দেন। এর বাইরে কয়েকটি দেশের ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
চীন থেকে অংশগ্রহণকারী বেশি
চীনের সর্বাধিক ১৪৭ জন এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ রয়েছে, এমন কোম্পানির পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজতেও কিছু কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি এ সম্মেলনে এসেছেন। কিন্তু এই চায়নিজ ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগই আগে থেকে বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশভিত্তিক অংশগ্রহণকারী বিবেচনায় এর পরের অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র (৪৪ জন), যুক্তরাজ্য (২৯ জন), ভারত (২৩ জন), জাপান (২০ জন)। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আসা অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল মোটের অর্ধেক। তবে এরা বেশির ভাগই প্রবাসী বাঙালী।
ঢাকাঢোল পিটিয়ে এবারের তথাকথিত সর্বকালের সেরা বিজনেস সামিট ঘোষনা করা সামিটে বিনিয়োগের পরিমান ছিল মাত্র $৭০ মিলিয়ন ডলার। অথচ আওয়ামীলীগ সরকারের প্রথম বছরেই বিনিয়োগ ছিল $৯০০ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশে গত ১৬ বছরে (২০০৯ থেকে ২০২৪) বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) সংক্রান্ত তথ্য:
FDI পরিমাণ (মার্কিন ডলার)
২০০৯- $৯০০ মিলিয়ন
২০১০- $১.২৩ বিলিয়ন
২০১১- $১.২৬ বিলিয়ন
২০১২- $১.৫৮ বিলিয়ন
২০১৩- $২.৬০ বিলিয়ন
২০১৪- $২.৫৪ বিলিয়ন
২০১৫- $২.৮৩ বিলিয়ন
২০১৬- $২.৩৩ বিলিয়ন
২০১৭- $১.৮১ বিলিয়ন
২০১৮- $২.৪২ বিলিয়ন
২০১৯- $১.৯১ বিলিয়ন
২০২০- $১.৫৩ বিলিয়ন
২০২১- $১.৭২ বিলিয়ন
২০২২- $৩.৪৮ বিলিয়ন
২০২৩- $৩.০০৪ বিলিয়ন
২০২৪- $১.৪৭ বিলিয়ন
বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের পরিচয় ধারাবাহিক রিপোর্টে তুলে ধরা হবে।