সরকারি কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় কিছু লোকের বাধা এবং হুমকি পেয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার রাতে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় তিনি এ জিডি করেন।
জিডি সূত্রে জানা যায়, দেওয়ানগঞ্জের ইউএনও আতাউর রহমান উপজেলা পরিষদের ভেতরে অবস্থিত উপজেলা মডেল মসজিদের উত্তর পাশের বাউন্ডারি ওয়াল পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করতে চাইলে স্থানীয় কতিপয় লোক তাতে বাধা দেন। এ ছাড়া কিছুদিন ধরে উপজেলা পরিষদের সরকারি কোয়ার্টার থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে, কে বা কারা বাউন্ডারি ওয়াল থেকে রড এবং ইট খুলে নিচ্ছে।
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কিছু লোক উপজেলা মডেল মসজিদের উত্তর পাশের বাউন্ডারি ওয়াল ঘেঁষে ৪৫ ফুট গভীর সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ শুরু করে। ঈদের ছুটির পর অফিস খুললে বিষয়টি ইউএনওর নজরে এলে তার নির্দেশে সেপটিক ট্যাংক নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং তিন দিনের মধ্যে তা অপসারণের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, সেপটিক ট্যাংক নির্মাণের ব্যাপারে কথা বলতে গত ৮ এপ্রিল বিকেলে ইউএনওর বাসভবনের পার্শ্ববর্তী এলাকার তিন যুবক ইউএনওর কক্ষে আসেন এবং তারা ইউএনওকে জানিয়ে দেন যে তারা সেখান থেকে সেপটিক ট্যাংক অপসারণ করবেন না এবং উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারি ওয়াল পুনর্নির্মাণ করতে গেলেও তারা বাধা দেবেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নিলে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেখে নেওয়ারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এ সময় দেওয়ানগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুজ্জামান আসিফ, মাধ্যমিক অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার সজল ভদ্রসহ উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, ‘সরকারি কার্যসম্পাদন করাই আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার বাসভবনের পার্শ্ববর্তী কতিপয় লোকের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছি। তারা আমাকে উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারি ওয়াল পুনর্নির্মাণ করতে দেবেন না বলে হুমকি প্রদান করেছেন এবং তারা সরকারি জায়গায় ৪৫ ফুট গভীর সেপটিক ট্যাংক নির্মাণ শুরু করেছিলেন।
সেই কাজে আমি বাধা দেওয়ায় তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে, তারা আমাকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তারা যেন পরবর্তীতে কোনো অপ্রীতিকর কাজ করতে না পারেন সেই লক্ষ্যে নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি।’
তিনি আরো জানান, ‘কারো সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই। শুধু আমার দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই। তারা যদি আমার কাজে কোনো বাধা না দেন আমিও তাদের বিপক্ষে কিছুই করব না।
’
ইউএনওর জিডি প্রসঙ্গে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একটি জিডি হয়েছে, তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।’