সারা দেশের মতো প্রতিবছর নেত্রকোনার সর্বত্র বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গাপূজার আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার এ জেলায় অন্তত ৯৫টি মণ্ডপে কোনো পূজার আয়োজন হচ্ছে না।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে রীতি অনুযায়ী ‘মহালয়া’ আয়োজনের মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে সনাতনীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল পর্ব।
মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ সময়ের কাজ। তবে, গেল বছরের তুলনায় এ জেলায় এবছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সাধারণ ব্যাবসায়ী এবং পূজাসংক্রান্ত বিভিন্ন পসরার দোকানি বা আলোকসজ্বার ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে গেল বছরের তুলনায় কম সংখ্যক পূজা মণ্ডপের প্রস্তুতির কথা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেত্রকোনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত জানান, এবছর নেত্রকোনায় ৪৬৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে গত বছরের মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৫৬০টি। ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ের বন্যা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে অনেকেই এবছর পূজার জন্য বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও ‘হয়তোবা কোনো আতঙ্কের কারণে’ও অনেকেই পূজা আয়োজনের সাহস করতে পারেনি বলে ধারণা এই সংগঠকের।
এ বছর পূজার মণ্ডপের সংখ্যা তুলনামূলক কম হবার কারণ হিসেবে নেত্রকোনা জেলার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, অনেকেই পারিবারিকভাবে পূজার আয়োজন করে থাকতো। অনেকেই পারিবারিকভাবে পূজার আয়োজন করছে না বলেই এ জেলায় এবার মোট মন্ডপের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম বলে মনে করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে নেত্রকোনাকে এখনও ধর্মীয় সম্প্রীতির অঞ্চল বলেই বিশ্বাস করেন লিটন পন্ডিতসহ এ অঞ্চলের সাধারণ সনাতনীরা। পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও জেলা প্রসাশন ও পৌরসভার প্রশাসকসহ প্রত্যেকেই নির্বিঘ্নভাবে পূজা আয়োজনের সব ধরণের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, পূজাতে নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি হিসেবে প্রত্যেকটি মণ্ডপেই সিসিটিভির ব্যাবহার নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও থাকবে পর্যাপ্ত পরিমানে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ও নিরাপত্তারক্ষী। পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল পার্টি, স্ট্যান্ডিং ডিউটি ও ক্লাস্টার ব্যাসিসে পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়োগ করা থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তাসংক্রান্ত অনান্য বাহিনীগুলোও সক্রিয় থাকবে বলে আশ্বাস দেন।