Saturday, May 31, 2025

প্রত্যাবর্তন/ কামাল হোসেন মিঠু

নিঃসঙ্গ মুনিয়া কাঁদে প্রাণের ভিতর। অন্তর পুড়ে কাঠ কয়লা পঙ্খীর ডানায় তবু আকাঙ্ক্ষার পালক। পাখির নাম দিয়েছি প্রত্যাবর্তন। পাখি নীড়ে ফিরতে চায়। সবুজ পাতায় গড়া গৃহকোন তাকে ডাকে। পঙ্খী তড়পায়। জল চায়, হাওয়া চায়, ওড়বার অবারিত আকাশ। ও আমার পরাণের পাখি, তোর মতোই প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশায় কেঁদেছিল নাকি জনকের প্রাণ? সুবিশাল বক্ষজুড়ে উঠেছিলো মেঘনার ঢেউ? সেই জলে ছায়া পড়েছিলো কার? চিরচেনা প্রিয় বাংলার?

বিবাংলা ডেস্ক
০ মন্তব্য ১৫১ views

নিঃসঙ্গ মুনিয়া কাঁদে প্রাণের ভিতর। অন্তর পুড়ে কাঠ কয়লা পঙ্খীর ডানায় তবু আকাঙ্ক্ষার পালক। পাখির নাম দিয়েছি প্রত্যাবর্তন। পাখি নীড়ে ফিরতে চায়। সবুজ পাতায় গড়া গৃহকোন তাকে ডাকে। পঙ্খী তড়পায়। জল চায়, হাওয়া চায়, ওড়বার অবারিত আকাশ। ও আমার পরাণের পাখি, তোর মতোই প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশায় কেঁদেছিল নাকি জনকের প্রাণ? সুবিশাল বক্ষজুড়ে উঠেছিলো মেঘনার ঢেউ? সেই জলে ছায়া পড়েছিলো কার? চিরচেনা প্রিয় বাংলার?

আমার পিতা ছিলেন একজন সাহসী মানুষ। শত্রুর চোখে স্থির দৃষ্টি রেখে তিনি গেয়েছিলেন শেকল ভাঙার গান।

বন্দীশালার অন্ধকার? না।

একাকিত্বের হিংস্রতা? না।

মৃত্যুর চোখ রাঙানি? না। একদম না। এসব কিছুই তাঁকে ভীত করেনি।

যার বুকে জ্বলে সাতকোটি আস্থার আলো তাঁকে কে দমায়? জয়-বাংলায় দৃপ্ত যে চোখ তাঁকে কে থামায়? ওরা ভেবেছিলো শেখ মুজিবুর রহমান শুধুই একটি নাম। ওরা ভেবেছিলো দীর্ঘ বন্দীত্বের আড়ালে হারিয়ে যাবে মানুষটি। ওরা বুঝতে পারেনি বন্দীশালায় আটকে রাখা যায় একটি মানুষকে, একটি দেশকে নয়। ওরা আমার জনককে নয়, বন্দী করেছিলো তাঁকে যার বুকে ছিলো বাংলাদেশ নামক একটি গোটা দেশ। চারদেয়ালের সাধ্য কি বাংলাদেশকে বন্দী করে রাখে।

আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান। হ্যাঁ, আমি বলছি। আমার সাহসী পিতার বুকেও কেঁদেছিল প্রত্যাবর্তনের পাখি। তবে সেই প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশা তাঁকে দুর্বল করেনি।

জলে ভেজা খুব প্রিয় একজোড়া চোখ তাঁকে বলেছিলো, জয়ী হয়ে ফিরে এসো, আমি অপেক্ষায় থাকবো।

সন্তানের উষ্ণতা আলিঙ্গন করে বলেছিলো- ফিরে এসে চতুর শেয়ালের জব্দ হওয়ার গল্পটা শোনাবে কিন্তু।

ঘরের দাওয়ায় অপেক্ষমান পিতামাতা শূন্যে হাত বাড়িয়ে বলেছিলো, তুইই আমার সাহস। ফিরে আয়। একসাথে ভাত খাবো।

সাতকোটি বাঙালি বলেছিলো, যার যা আছে সবটুকু পুঞ্জি করে কিনেছি বাংলা। আর কিছু নাই তুমি ছাড়া। ফিরে এসো আমার মুজিব। ভরসা আমার, ফিরে এসো।

আমার পিতা ফিরে এসেছেন। আমার বীর ফিরে এসেছেন। আমার নেতা, আমার আস্থা ফিরে এসেছেন। মুজিব ফিরেছে স্বদেশের বুকে। মুজিব নয়। মুজিব নয়। বাংলাদেশের মাটিতে দৃপ্ত পায়ে হেঁটে ফিরেছে স্বয়ং স্বদেশ।

আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। আমি তাঁর গর্বিত সন্তান। পিতা আমাকে শিখিয়েছেন কেমন করে ফিরতে হয়। কেমন করে প্রত্যাবর্তন নামক পাখিটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় প্রাণের ভেতর। আমার মুজিব আমাকে শিখিয়েছেন ফিরতে হলে ফেরার মতো ফিরবি, শিরদাঁড়া টান টান করে ফিরবি।

আমার প্রত্যাবর্তন নামক পাখিটিও বড় ছটফটায়। আমিও ফিরবো। জয়-বাংলা ধ্বনি তুলে পিতার ভিটায় ফিরবো। পাখি খুঁজে পাবে নীড়। খুঁজে পাবে সবুজ পাতার আশ্রয়, আর উড়ে বেড়ানোর এক টুকরো চিরচেনা বিশ্বাসী আকাশ।

আরো পড়ুন

একটি মন্তব্য লিখুন

আমাদের সম্পর্কে

বাঙালীর সংবাদ বাংলা ভাষায়, সবার আগে সেরা সংবাদ পেতে বি-বাংলা ভিজিট করুন।

আজকের সর্বাধিক পঠিত

নিউজলেটার